বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন
’৭২ সনে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় বিগ্রেডিয়ার খালেদ মোশারফ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন- ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টিম জুন মাসে ঢাকাতে আসছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্বন্ধে সরেজমিনে ঘটনাবলী অবগত হওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের প্রচারযন্ত্র আন্তর্জাতিক মহলকে বুঝাতে চেষ্টা করছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এ খবর পাওয়া মাত্র আমি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টিমটির অভ্যর্থনার ব্যবস্থা করি। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যদি পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য না দেয়, তাহলে সেই আর্থিক সাহায্যের অভাবে পাকিস্তানের সমরাস্ত্র কেনার ও যুদ্ধ পরিচালনার পক্ষে যথেষ্ঠ অসুবিধা হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমি গেরিলাদের একটি দলকে ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরন ঘটানো এবং পাকিস্তানীদের নিহত করার জন্য পাঠিয়ে দিই।
ইতোমধ্যে দলটি খবরাখবর নেয় যে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টিম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করছে। এ খবর পাবার পর ২জন গেরিলা ৯ই জুন সন্ধ্যা ৮-১৫ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রবেশ করে এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টিম-এর হোটেলে ফেরার প্রতীক্ষায় থাকে। তারা যখন তাদের গাড়ীতে করে আসেন এবং গাড়ী নীচে রেখে হোটেলের ভিতরে প্রবেশ করেন। সে সময় গেরিলা দলটি গাড়ী লক্ষ করে ৩টি গ্রেনেড ছোঁড়ে। এর ফলে গাড়ীটা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায় এবং নিকটবর্তী একজন পাঞ্জাবী সেনাও নিহত হয়। এই ঘটনার পর ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টিম বাংলাদেশ ত্যাগ করে এবং ফিরে গিয়ে তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্বন্ধে সঠিক ঘটনাবলী তুলে ধরেন। তাঁরা তাঁদের রিপোর্টে-পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য না দেয়ার সুপারিশ করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এটা ছিল পাকিস্তানের পক্ষে এক বিরাট পারাজয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিবিসি তাদের প্রচারিত সংবাদে প্রকাশ করে যে, ‘ঢাকা শহর গেরিলাদের দখলে’। ২নং সেক্টরের অধিনায়ক খালেদ মোশারফ এই গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের দলটিকে ক্র্যাকপ্লাটুন নামে আখ্যায়িত করেন।
শাফায়েত জামিল রাজীব
সম্পাদক
একুশে টাইমস্